আল্লাহ দিকে আহবান/দাওয়াত এ এক মহান ইবাদত। একজন দাঈ তখনই সফল যখন তার কাজকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কবুল করেন। যদি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কবুল না করেন, দাঈর খ্যাতি,অনুসারী, বা জনতার নিকট গ্রহণযোগ্যতা,তার লেখনির আধিক্য, শ্রুতিমধুর কথা, যতই থাকুক না কেন। তিনি জনপ্রিয় হতে পারেন কিন্তু সফল নয়। একজন দাঈর সাফল্যের জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন ইখলাছ(الإخلاص) বা একনিষ্ঠতা।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার রাসুল (সাঃ) বলেছেন :-
قُلْ اِنِّیْۤ اُمِرْتُ اَنْ اَعْبُدَ اللّٰهَ مُخْلِصًا لَّهُ الدِّیْنَۙ-
وَ اُمِرْتُ لِاَنْ اَكُوْنَ اَوَّلَ الْمُسْلِمِیْنَ
(হে নবী!) এদের বলো, আমাকে আদেশ দেয়া হয়েছে, যেন আমি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহরই দাসত্ব করি। এবং
আমাকে এ আদেশও দেয়া হয়েছে যেন আমি সবার আগে মুসলমান হই। (সুরা আয-যুমার : ১১,১২)
যারা মহান আল্লাহর নিকট পুরস্কারের আশায় একনিষ্ঠতার সাথে কাজ করে তারাই সফল। আল্লাহ নবী নুহ (আ:) তার জাতিকে বলেছিলেন
وَ یٰقَوْمِ لَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مَالًا١ؕ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلَى اللّٰهِ وَ مَاۤ اَنَا بِطَارِدِ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا١ؕ اِنَّهُمْ مُّلٰقُوْا رَبِّهِمْ وَ لٰكِنِّیْۤ اَرٰىكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُوْنَ
হে আমার কওম! এ কাজের জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন অর্থ চাচ্ছি না। আমার প্রতিদান তো আল্লাহর কাছেই রয়েছে। আর যারা আমার কথা মেনে নিয়েছে তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়াও আমার কাজ নয়, তারা নিজেরাই নিজেদের রবের কাছে যাবে। কিন্তু আমি দেখছি তোমরা মূর্খতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছ।( সুরা হুদ আয়াত: ২৯)
দ্বিতীয়তঃ কথা ও কাজের মিল রাখা
দাঈ কতটুকু সফল তা তার কর্মের ফুটে উঠে, তিনি যা মানুষকে হেদায়েতের জন্য বলবেন তা নিজে আমলে পরিনত করতে পারলে বুঝা যাবে তিনি সাফল্য লাভ করতে যাচ্ছেন। আল্লাহর নবী শুআইব (আঃ) তার কওমের লোকদের বলেন:
قَالَ یٰقَوْمِ اَرَءَیْتُمْ اِنْ كُنْتُ عَلٰى بَیِّنَةٍ مِّنْ رَّبِّیْ وَ رَزَقَنِیْ مِنْهُ رِزْقًا حَسَنًا١ؕ وَ مَاۤ اُرِیْدُ اَنْ اُخَالِفَكُمْ اِلٰى مَاۤ اَنْهٰىكُمْ عَنْهُ١ؕ اِنْ اُرِیْدُ اِلَّا الْاِصْلَاحَ مَا اسْتَطَعْتُ١ؕ وَ مَا تَوْفِیْقِیْۤ اِلَّا بِاللّٰهِ١ؕ عَلَیْهِ تَوَكَّلْتُ وَ اِلَیْهِ اُنِیْبُ
শো’আয়েব বললোঃ “ভাইয়েরা! তোমরা নিজেরাই ভেবে দেখো, যদি আমি আমার রবের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট সাক্ষ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকে থাকি, তারপর তিনি আমাকে উত্তম রিযিক দান করেন (তাহলে এরপর আমি তোমাদের গোমরাহী ও হারামখোরীর কাজে তোমাদের সাথে কেমন করে শরীক হতে পারি?) আর যেসব বিষয় থেকে আমি তোমাদের বিরত রাখতে চাই আমি নিজে কখনো সেগুলোতে লিপ্ত হতে চাই না। আমি তো আমার সাধ্য অনুযায়ী সংশোধন করতে চাই। যা কিছু আমি করতে চাই তা সবই আল্লাহর তাওফীকের ওপর নির্ভর করে। তাঁরই ওপর আমি ভরসা করেছি এবং সব ব্যাপারে তাঁরই দিকে রুজু করি। (সুরা হুদ: ৮৮)
কোন ব্যক্তি যদি ইলম অনুযায়ী আমল করে,আল্লাহ তাকে এমন ইলমের অধিকারী করবেন যা সে জানত না।
আর মানুষ বক্তব্য বা আলোচনা শুনে যতটুকু প্রভাবিত হয় তার চাইতে বেশী প্রভাবিত হয় দাঈর আমল দেখে। তাই দাঈ’র কথা ও কাজের মিল তাকে আল্লাহর মকবুল বান্দাহদের কাতারে শামিল করে নিবে।
তৃতীয়তঃ সব সময়ে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা:
দ্বীনের পথে আশা বা দ্বীনের দাওয়াতি কাজে নিজকে নিযুক্ত করা এটা বড় কথা নয়। বরং একাজে আমৃত্যু টিকে থাকা এবং আল্লাহর সন্তোটি অর্জন করতে পারাটা হচ্ছে সফলতা। রাসুলুল্লাহ সাঃ দো‘আ করতেন,
يَاحَىُّ يَاقَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْثُ فَأَصْلِحْ لِىْ شَأْنِىْ كُلَّهَ وَلاَتَكِلْنِىْ إلِىَ نَفْسِىْ طَرْفَةَ عَيْنٍ،
‘হে চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী! তোমার রহমতে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। সুতরাং তুমি আমার সকল কর্মকান্ডকে সংশোধন করে দাও এবং তুমি আমার চোখের পলককেও আমার দিকে সোপর্দ করে দিও না’।
আল্লাহর মেহেরবানীতে দাঈ আমৃত্যু দাওয়াতি কাজে লেগে থাকতে পারাটাও একধরনের সফলতা।এছাড়া ও
দুনিয়াতে কিছু সাফল্য রয়েছে যেমন:-
ইলামী যোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে:
আল্লাহর দিকে মানুষকে দাওয়াত দিতে দাঈ নিয়মিত পড়াশোনা করে থাকেন এতে জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা, দূরদৃষ্টি সৃষ্টি হয়।এবং এর অর্জিত জ্ঞানের আলোকে নিজেকে পরিচালনা করে ও অন্যকে দাওয়াত দিয়ে থাকেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দিয়ে থাকেন। আল্লাহ বলেন :
وَ كَذٰلِكَ اَوْحَیْنَاۤ اِلَیْكَ رُوْحًا مِّنْ اَمْرِنَا١ؕ مَا كُنْتَ تَدْرِیْ مَا الْكِتٰبُ وَ لَا الْاِیْمَانُ وَ لٰكِنْ جَعَلْنٰهُ نُوْرًا نَّهْدِیْ بِهٖ مَنْ نَّشَآءُ مِنْ عِبَادِنَا١ؕ وَ اِنَّكَ لَتَهْدِیْۤ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍۙ
হে (নবী) আপনি জানতেন না, কিতাব কি এবং ঈমান কি? কিন্তু আমি একে করেছি নূর, যদ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করি। নিশ্চয়ই আপনি সরল পথ প্রদর্শন করেন(৪২:৫২)
পড়াশোনা ছাড়া যারা দাওয়াহ র কাজ করে থাকেন তাদের অনেকেই অজ্ঞতার কারণে বিভ্রান্তি ছড়ান। এতে করে শুরু হয় বিদ’আদ অথবা ফেৎনা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “প্রতিটি নতুন উদ্ভাবিত বিষয়ই বিদআত, এবং প্রতিটি বিদআতই পথভ্রষ্টতা,আর
পথভ্রষ্টতার নিদর্শন জাহান্নাম”।
কোনো ব্যক্তি যদি বিদআত করে, তাহলে তার তওবা ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণ করা হয় না, যতক্ষণ না সে বিদআত বর্জন করে। এ ব্যাপারে যে সব দাঈগন সতর্ক থাকবেন তারা দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মানিত হবেন।
অন্যায়,অশ্লীলতা ও বাজে আড্ডা থেকে নিজে মুক্ত রাখেন:
আল্লাহর ভয় মনের মধ্যে লালন করে থাকা ব্যক্তি সবসময় চেষ্টা করেন অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে। বিনা প্রয়োজনে অযাচিত আড্ডা থেকে নিজে দুরে রাখতে। অনেক সময় দেখা যায় সমাজের আড্ডাবাজ ও অন্যায় কারীরাও দাঈদের সম্মান করে, এসকল মজলিস গুলোতে দাঈদের ডাকেন না, এমন কি দাঈদের সমনে এমন কাজ করতে ইতস্তত বোধ করেন। তবে সমাজের মানুষ যদি দাঈদের সামনে অশ্লীল ও অন্যায় মুলক কাজ করে যেতে থাকে সে ক্ষেত্রে হযরতে ইব্রাহীম আঃ এর মত বাজে লোকগুলোকে পরিত্যাগ করাই শ্রেয়।
আল্লাহ বলেন:
فَلَمَّا اعْتَزَلَهُمْ وَ مَا یَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ١ۙ وَهَبْنَا لَهٗۤ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ١ؕ وَ كُلًّا جَعَلْنَا نَبِیًّا-
وَ وَهَبْنَا لَهُمْ مِّنْ رَّحْمَتِنَا وَ جَعَلْنَا لَهُمْ لِسَانَ صِدْقٍ عَلِیًّا۠
‘অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহ ব্যতীত যাদের ইবাদত করত, তাদের সবাইকে পরিত্যাগ করলেন, তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক্ব ও ইয়াকূবকে এবং প্রত্যেককে নবী করলাম। আর তাদেরকে নিজের অনুগ্রহ দান করলাম এবং তাদেরকে দিলাম যথার্থ নাম-যশ।
(সুরা মারইয়াম, আয়াত: ৪৯,৫০)
অনেক সময় বন্ধুদের আড্ডায় এমন পরিবেশ তৈরী হয়, যে প্রসঙ্গ ঠিক রাখা মুশকিল বা কন্ট্রোল এর বাহিরে চলে যায়। সেক্ষেত্রে ঐ মজলিস পরিত্যাগ করার নির্দেশ রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন –
وَ قَدْ نَزَّلَ عَلَیْكُمْ فِی الْكِتٰبِ اَنْ اِذَا سَمِعْتُمْ اٰیٰتِ اللّٰهِ یُكْفَرُ بِهَا وَ یُسْتَهْزَاُ بِهَا فَلَا تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتّٰى یَخُوْضُوْا فِیْ حَدِیْثٍ غَیْرِهٖۤ١ۖ٘ اِنَّكُمْ اِذًا مِّثْلُهُمْ١ؕ اِنَّ اللّٰهَ جَامِعُ الْمُنٰفِقِیْنَ وَ الْكٰفِرِیْنَ فِیْ جَهَنَّمَ جَمِیْعَاۙ
আল্লাহ এই কিতাবে তোমাদের পূর্বেই হুকুম দিয়েছেন, যেখানে তোমরা আল্লাহর আয়াতের বিরুদ্ধে কুফরী কথা বলতে ও তার প্রতি বিদ্রূপবাণ নিক্ষেপ করতে শুনবে সেখানে বসবে না, যতক্ষন না লোকেরা অন্য প্রসঙ্গে ফিরে আসে। অন্যথায় তোমরাও তাদের মতো হবে। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ মুনাফিক ও কাফেরদেরকে জাহান্নামে একই জায়গায় একত্র করবেন। (আন-নিসা আয়াত: ১৪০)
আত্নীয় স্বজনের নিকট গ্রহণ যোগ্যতা বৃদ্ধি পাওয়া:
একজন দাঈর বড় সফলতা হচ্ছে নিকটাত্মীয়দেকে ইসলামের সুশীতল ছায়ার আনতে পারা। আল্লাহর নির্দেশ হচ্ছে –
وَ اَنْذِرْ عَشِیْرَتَكَ الْاَقْرَبِیْنَۙ
নিজের নিকটতম আত্নীয়-পরিজনদেরকে ভয় দেখাও।
(আশ-শুআরা, আয়াত: ২১৪)
আমরা জানি রাসুলুল্লাহ সাঃ তার স্ত্রী, চাচা,কন্যা ও কওমের লোকদের প্রথমে দাওয়াত দিয়েছিলেন। এটা হচ্ছে দাওয়াতের সঠিক পন্থা। নিকটাত্মীয়গন দ্বীনের পথে চলে আসলে নিজস্ব অঙ্গনে গ্রহণ যোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
দাওয়াতি কাজ করতে অনন্দ পাওয়া:
দাওয়াতি কাজ সম্মানিত,মর্যাদাপূর্ণ ও একটি গৌরবময় ইবাদত। একাজে অধিক সময় ব্যায় করাটাকে বিরক্তিকর মনে হবে না। বরং এ কাজে যতক্ষণ সম্পৃক্ত থাকবে ততক্ষণ আনন্দ পাবে।
قُلْ هٰذِهٖ سَبِیْلِیْۤ اَدْعُوْۤا اِلَى اللّٰهِ١ؔ۫ عَلٰى بَصِیْرَةٍ اَنَا وَ مَنِ اتَّبَعَنِیْ١ؕ وَ سُبْحٰنَ اللّٰهِ وَ مَاۤ اَنَا مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ
তাদেরকে পরিষ্কার বলে দাওঃ আমার পথতো এটাই, আমি আল্লাহর দিকে ডাকি, আমি নিজেও পূর্ণ আলোকে নিজের পথ দেখছি এবং আমার সাথীরাও। আর আল্লাহ পাক-পবিত্র এবং শিরককারীদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। (সুর ইউসুফ, আয়াত: ১০৮)
দাওয়াতি কাজে আনন্দ পাওয়া শুরু হলে যত পরিশ্রম ও কষ্টই আসুক না কেন দাঈর কাছে তা তুচ্ছ বিষয় বলে মনে হবে। বরং পরিবার, সমাজ ও পার্শ্ববর্তী এলাকা ছাড়িয়ে কুরআনের দাওয়াত দিতে আনন্দচিত্তে ছুটে চলবে।
প্রকাশ্যে সুস্পষ্ট দাওয়াত দেওয়ার পরিবেশ তৈরী করা:
দাঈ কখনোই সফলতা লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তার দাওয়াত সুস্পষ্ট না হবে। সুস্পষ্ট বলতে আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ সাঃ আনুগত্যের দাওয়াত প্রকাশ্যে মানুষকে বলতে পারা। এর জন্য দাঈকে পরিবেশ ও লোক তৈরী করতে হবে। দাওয়াত মেনে নেওয়ার মানসিকতা সম্পন্ন লোক তৈরী না করে প্রকাশ্যে দাওয়াত দিতে গেলে হিতের বিপরীত হবে।তাই প্রকাশ্যে সুস্পষ্ট দাওয়াত দেওয়ার পরিবেশ তৈরী করতে পারা দাঈর একটা বড় সফলতা। হযরতে নূহ আঃ এর দাওয়াতে পদ্ধতিটি ছিল এমন।
وَ اِنِّیْ كُلَّمَا دَعَوْتُهُمْ لِتَغْفِرَ لَهُمْ جَعَلُوْۤا اَصَابِعَهُمْ فِیْۤ اٰذَانِهِمْ وَ اسْتَغْشَوْا ثِیَابَهُمْ وَ اَصَرُّوْا وَ اسْتَكْبَرُوا اسْتِكْبَارًاۚ- ثُمَّ اِنِّیْ دَعَوْتُهُمْ جِهَارًاۙ-ثُمَّ اِنِّیْۤ اَعْلَنْتُ لَهُمْ وَ اَسْرَرْتُ لَهُمْ اِسْرَارًاۙ- فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوْا رَبَّكُمْ١ؕ اِنَّهٗ كَانَ غَفَّارًاۙ-
তুমি যাতে তাদের ক্ষমা করে দাও এ উদ্দেশ্যে আমি যখনই তাদের আহবান করেছি তখনই তারা কানে আঙুল দিয়েছে, এবং কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে নিয়েছে, নিজেদের আচরণে অনড় থেকেছে এবং অতিমাত্রায় ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছে। অতঃপর আমি তাদেরকে উচ্চকণ্ঠে আহবান জানিয়েছি।তারপর প্রকাশ্যে তাদের কাছে তাবলীগ করেছি এবং গোপনে চুপে চুপে বুঝিয়েছি।আমি বলেছি তোমরা নিজেদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চাও। নিঃসন্দেহে তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। (সুরা নূুহ ৭-১০)
সাইয়্যেদুনা মুহাম্মাদ (সাঃ)ও তিন বছর গোপনে দাওয়াত দিয়েছিলেন। কিছুটা পরিবেশ তৈরী হওয়ার পর প্রকাশ্যে দাওয়াতি কাজ করেছেন।
যদি দাঈ কোন অমুসলিম দেশে বসবাস করে এবং আশংকা করে যে,মানুষকে ইসলামের দিকে আহবান করলে লাঞ্ছিত-অপমানিত হতে হবে অথবা ডকুমেন্টস কেড়ে নিবে বা প্রাণদন্ডে দন্ডিত হবে তাহলে ভিন্ন কথা। কিন্তু কোন মুসলিম ভূ-খন্ডে কিংবা মুসলিম দেশে বসবাস করলে উচিত হবে প্রকাশ্যভাবে দাওয়াত দেওয়া।
দাওয়াতি কাজ জারি রাখতে প্রতিষ্ঠান তৈরী করা:
দাওয়াতি কাজের সিলসিলা ঠিক রাখতে ভবিষ্যত দাঈ তৈরী করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বা ইনস্টিটিউট অথবা সংগঠন তৈরী করা। যা পরিচালিত হবে কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে। যেখানে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কিছু নিরলসভাবে কাজ করার লোক থাকবে।
মুসলিম দেশ হোক বা অমুসলিম দেশ হোক দাওয়াতের মূল লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে সংঘবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নাই।
চলবে—
বই- দাঈ ও সংগঠক– লেখক – আবু নাঈম মু শহীদুল্লাহ।