খুতবা
بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على سيدنا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين.
أما بعد:
প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা,
আজ আমরা ঈদুল আযহার মহান দিনে সমবেত হয়েছি। এই দিনের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম দিন হলো কুরবানীর দিন (ইয়াওমুন নাহর) এবং পরের দিন (ইয়াওমুল ক্বার)।”
এই দিনটি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
১. ইবরাহীম (আ.)-এর মহান সুন্নত ও কুরবানীর শিক্ষা
ঈদুল আযহা আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর মহান ত্যাগ ও আত্মসমর্পণের ইতিহাস। আল্লাহর নির্দেশে তিনি নিজের প্রিয় পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে কুরবানী দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাঁর এই আত্মত্যাগকে কবুল করে একটি দুম্বা কুরবানী হিসেবে গ্রহণ করলেন।
আমরা আজ যে পশু কুরবানী করি, তা মূলত একটি প্রতীকী কুরবানি। প্রকৃত কুরবানি হলো—আল্লাহর আদেশ মান্য করা এবং নিষিদ্ধ কাজ থেকে দূরে থাকা। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা যদি আল্লাহর হুকুম পালন করি এবং গুনাহ থেকে বেঁচে থাকি, তবেই আমাদের কুরবানি সার্থক হবে।
২. আমরা একটি উম্মাহ—মুসলিম হিসেবে আমাদের পরিচয়
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে একটি উম্মাহ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। আমাদের জাতিসত্তার নাম হলো “মুসলিম”। এই নাম দিয়েছেন আমাদের পিতা ইবরাহীম (আ.)। আল্লাহ বলেন,
“তিনি তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম।” (সূরা হজ্জ: ৭৮)
আমাদের জাতির ভিত্তি হলো ঈমান—জাতি, ভাষা, বর্ণ বা ভৌগোলিক সীমানা নয়।
একটি স্বমর্যাদাশালী উম্মাহ হতে আমাদের কী প্রয়োজন?
১. আমাদের নিজস্ব কেন্দ্র—কাবা:
আল্লাহ আমাদেরকে একটি ঐক্যবদ্ধ উম্মাহ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এর জন্য আমাদের একটি সাধারণ কেন্দ্র ও কিবলা দরকার ছিল। আল্লাহ আমাদেরকে কাবাকে কেন্দ্র ও কিবলা হিসেবে দান করেছেন। পূর্বে আমাদের কিবলা ছিল বাইতুল মুকাদ্দাস, যা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের জন্যও পবিত্র ছিল। কিন্তু আল্লাহ আমাদেরকে একটি স্বতন্ত্র কিবলা দান করেছেন—যা শুধু মুসলিমদের জন্য।
২. আমাদের স্বকীয় সংস্কৃতি:
একটি মর্যাদাপূর্ণ জাতি হতে হলে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি থাকতে হবে। আমাদের সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য হলো—
- আমাদের আতিথেয়তা,
- আমাদের সালামের আদান-প্রদান,
- আমাদের পোশাক-পরিচ্ছদ,
- আমাদের বিনোদন ও উৎসবের পদ্ধতি।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দুটি ঈদ দান করেছেন—ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। তাই আমাদের কর্তব্য হলো এই ঈদগুলোকে যথাযথভাবে উদযাপন করা।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আমি আপনাদেরকে এবং নিজেকে উপদেশ দিচ্ছি—আসুন, আমরা আমাদের ঈদকে আনন্দময় করে তুলি। শরিয়তের সীমানা রক্ষা করে আমরা আমাদের ঈদকে উজ্জ্বল করে তুলব। নিজেদেরকে একাকী রাখব না, ঈদকে নীরস করব না। আমাদের শিশুরা যেন বুঝতে পারে যে, আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, আমাদের উৎসব আছে। আমরা চাই না যে আমাদের সন্তানরা অন্য সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হোক। তাই আমাদের উৎসবকে আকর্ষণীয় করতে হবে। - সুস্বাদু খাবার তৈরি করুন,
- আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ করুন,
- তাদেরকে দাওয়াত দিন,
- আনন্দ করুন, খুশি থাকুন,
- এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন।
اللهم اجعلنا من الشاكرين، وارزقنا التوفيق في الدنيا والآخرة.