মানুষকে আল্লাহর একত্ববাদের দিকে আহবান করা এক মহান দায়িত্ব ও ইবাদত। দুনিয়ার বেশীরভাগ মানুষ আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে বীরদর্পে বসবাস করে যাচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ কখনো এ মানুষদেরকে দুনিয়ায় থেকে বাহির করে দেন না। অথচ প্রতিটি মানুষ দুনিয়াতে আসার পূর্বে আল্লাহকে নিজের মালিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তার সাথে ওয়াদা বদ্ধ হয়েছে- যে শুধু মাত্র তারই গোলামী করবে,বি তারই প্রতিনিধিত্ব করবে। দুনিয়াতে আসার পর মানুষ নিজ খেয়াল খুশী মতে চলচল করছে। তার কৃত ওয়াদার ব্যাপারে একেবারেই গাফেল হয়ে রয়েছে ।
নিজ খেয়াল খুশী মত চলা লোকগুলোকে আল্লাহর নির্দেশ পালনের সচেষ্ট ও সর্তক হওয়ার আহবান একটা বড় ইবাদত। আল্লাহর দিকে আহবান বা দাওয়াত শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞানে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এর রয়েছে নির্দিষ্ট লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এ কাজে রয়েছে বাস্তবধর্মী অগ্রাধিকার। দাওয়াতি কাজে সফলতা তখনই আসবে, যখন এর সুনির্দিষ্ট চূড়ান্ত লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সময়োপযোগী অগ্রাধিকার সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা থাকবে। দাওয়াতের চুড়ান্ত লক্ষ্য সম্পর্কে বিশ্ব বিখ্যাত দাঈ ও সংগঠকদের কিছু চিন্তা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমেদীন মাওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী র: বলেন :-
ইসলামের দাওয়াত হচ্ছে এমন একটি আহ্বান যা মানুষকে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মেনে চলার জন্য ডাকে, এবং সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি সবকিছু আল্লাহর বিধানের অধীন করার প্রয়াস চালায়।
ড. আল্লামা ইউসুফ আল-কারদাভি (রহ.) বলেন
দাওয়াত এক ভারসাম্যপূর্ণ, প্রজ্ঞাপূর্ণ ও সহনশীল আহ্বান।
“দাওয়াতের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো মানুষের হৃদয় আল্লাহর দিকে ফেরানো, ইসলামি মূল্যবোধে তাদের জীবন গড়ার চেষ্টা করা এবং ন্যায়বিচার ও শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।”
সাইয়েদ বদিউজ্জামান নুরসী (রহ.) বলেন
দাওয়াতের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো ঈমান রক্ষা করা, মানুষের হৃদয়ে তাওহীদ ও আখিরাতের গুরুত্ব সৃষ্টি করা এবং নৈতিক পতনের বিরুদ্ধে একটি চিন্তাশীল ইসলামী নবজাগরণ সৃষ্টি করা।
মানুষকে গোমরাহি থেকে ফিরিয়ে এনে আল্লাহর পথে পরিচালিত করাই চূড়ান্ত লক্ষ্য, যাতে তারা আখিরাতে মুক্তি পায়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলেন :
وَ لْتَكُنْ مِّنْكُمْ اُمَّةٌ یَّدْعُوْنَ اِلَى الْخَیْرِ وَ یَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ یَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ١ؕ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যই থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে। যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলকাম হবে। (৩:১০৪)
এছাড়াও, রাসূল (সা.) বলেছেন:
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ لِعَلِيٍّ فَوَاللهِ لأَنْ يَهْدِيَ اللهُ بِكَ رَجُلاً وَاحِداً خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ متفقٌ عَلَيْهِ
সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (খায়বার যুদ্ধের সময়) আলী (রাঃ) কে সম্বোধন করে বললেন, আল্লাহর শপথ! তোমার দ্বারা একটি মানুষকেও যদি আল্লাহ সৎপথ দেখান, তবে তা (আরবের মহামূল্যবান) লাল উট অপেক্ষা উত্তম হবে। (বুখারী ৩০০৯)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরো বলেন
اَلَّذِیْنَ اِنْ مَّكَّنّٰهُمْ فِی الْاَرْضِ اَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتَوُا الزَّكٰوةَ وَ اَمَرُوْا بِالْمَعْرُوْفِ وَ نَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ١ؕ وَ لِلّٰهِ عَاقِبَةُ الْاُمُوْرِ
এরা এমন সব লোক যাদেরকে আমি যদি পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দান করি তাহলে এরা নামায কায়েম করবে, যাকাত দেবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং খারাপ কাজে নিষেধ করবে। আর সমস্ত বিষয়ের পরিণাম আল্লাহর হাতে।
— [সূরা হজ্জ ২২:৪১]
ইসলাম শুধু ইবাদতের ধর্ম নয়, বরং ন্যায়, সত্য, শান্তি ও মানবিকতার এম মহান জীবন ব্যবস্থার নাম। আর দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে সমাজে নৈতিকতা ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত করাই মুল উদ্দেশ্য। দাওয়াতের মাধ্যমে ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, যাতে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রসহ সকল কিছু আল্লাহর বিধান অনুযায়ী চলে।”
আমাদের সমাজে দাওয়াতি কাজ সম্পর্কে প্রতিষ্ঠিত ধারনা হচ্ছে – সমাজের যে লোক নামাজে গাফেল তাকে নামাজের জন্য ডাকা অথবা রোজা রাখার ব্যাপারে নসিহা করা। তাসবিহ তাহলিল এর বিষয়ে যত্নবান হওয়ার জন্য ওয়াজ করাকে ইসলামের দিকে আহবান করা বুঝায়! মানুষের মনের মধ্যে এ ধারনা প্রতিষ্ঠিত থাকায় মানুষ নামাজ পড়ে আবার আল্লাহর নাফরমানিও করে। আর এ জন্য ই আমাদের সমাজে অনেককে বাহ্যিক পরহেজগার দেখা যায়। কিন্তু তারা সুদ,ঘুষ,যেনা,ও যুলুমকে কোন অপরাধই মনে করেনা। তাদের ধারণা নামাজ পড়লেই মাফ পেয়ে যাবে। তাদের সামনে কেউ যদি কুরআনিক বিধানের আলোকে সমাজ পরিচালনার কথা বলে। তখন তারা এটাকে রাজনৈতিক কথা মনে করে। অথচ ইসলামের দাওয়াই হচ্ছে একটা বৈপ্লবিক দাওয়াত। আল্লাহ তার রাসুল সাঃ কে পাঠানোর বিষয়ে পবিত্র কুরআন বলেছেন :
هُوَ الَّذِیْۤ اَرْسَلَ رَسُوْلَهٗ بِالْهُدٰى وَ دِیْنِ الْحَقِّ لِیُظْهِرَهٗ عَلَى الدِّیْنِ كُلِّهٖ١ۙ وَ لَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُوْنَ
আল্লাহই তার রসূলকে পথনির্দেশ ও সত্য দ্বীন সহকারে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে সকল প্রকার দ্বীনের ওপর বিজয়ী করেন, মুশরিকরা একে যতই অপছন্দ করুক না কেন।(৯: ৩৩)
ইসলামের দাওয়াত শুধুমাত্র নামাজ-রোজা শেখানো নয় — এটি একটি সামগ্রিক জীবনবিধান যা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা করে এবং আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিশ্বজগতকে পরিচালনার আহ্বান । তাই ইসলামের দাওয়াত এক বৈপ্লবিক দাওয়াত।
দাঈদের দাওয়াত হবে-
মানুষের চিন্তা ও অন্তরে ইসলামী আকীদা প্রতিষ্ঠা করার দাওয়াত।
ইবাদত ও চরিত্রে ইসলামের বাস্তব অনুশীলন নিশ্চিত করনের দাওয়াত
ইসলাম ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে সমাজের বন্ঞ্চিত নিপীড়িত মানুষের অধিকার নিশ্চিত করনের দাওয়াত। খালেস নিয়তে নিরলসভাবে এ কাজ করে যেতে পারলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা সন্তুষ্ট হবেন। আর আল্লাহর সন্তুষ্টির মাধ্যমে পরকালীন মুক্তি নিশ্চিত করনই হচ্ছে দাওয়াতের চুড়ান্ত লক্ষ্য।
দাওয়াতি কাজের অগ্রাধিকার –
দাওয়াতের কাজে নিযুক্তদের সফলতা জন্য সু নির্দিষ্ট একটা পরিকল্পনা থাকা জরুরী। মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ এলাকায় হোক বা মুসলিম সংখ্যা লঘিষ্ঠ এলাকায় হোক। ইসলামের দাওয়াত দিতে হলে সর্বপ্রথম
নিজের আত্মশুদ্ধি প্রয়োজন।
اَتَاْمُرُوْنَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَ تَنْسَوْنَ اَنْفُسَكُمْ وَ اَنْتُمْ تَتْلُوْنَ الْكِتٰبَ١ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ
তোমরা অন্যদের সৎকর্মশীলতার পথ অবলম্বন করতে বলো কিন্তু নিজেদের কথা ভুলে যাও। অথচ তোমরা কিতাব পাঠ করে থাকো। তোমরা কি জ্ঞান বুদ্ধি একটুও কাজে লাগাও না? (সূরা বাকারা: ৪৪)।
নিজেকে তৈরী না করে অন্যকে দাওয়াত দিলে এ দাওয়াতের ফলাফল ভাল হয় না। যতই সুললিত কন্ঠে চমকিত বাক্যে কথা বলুক না কেন, এতে মানুষ প্রভাবিত হয় না। তাই দাঈ অর্জিত জ্ঞানের আলোকে আমল ও নিজেকে পরিশুদ্ধ করার কাজে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা জরুরি।
দ্বিতীয়ত নিজ পরিবারকে পরিপূর্ণ ইসলামের দাওয়াত পেশ করা। পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে পরিপূর্ণ দীন মেনে চলা, আল্লাহ বলেন:
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا ادْخُلُوْا فِی السِّلْمِ كَآفَّةً١۪ وَّ لَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِ١ؕ اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِیْنٌ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা পুরোপুরি ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের অনুসারী হয়ো না, কেননা সে তোমাদের সুস্পষ্ট দুশমন।(২,:২০৮)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا قُوْۤا اَنْفُسَكُمْ وَ اَهْلِیْكُمْ نَارًا وَّ قُوْدُهَا النَّاسُ وَ الْحِجَارَةُ عَلَیْهَا مَلٰٓئِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا یَعْصُوْنَ اللّٰهَ مَاۤ اَمَرَهُمْ وَ یَفْعَلُوْنَ مَا یُؤْمَرُوْنَ
হে লোকজন যারা ঈমান এনেছো, তোমরা নিজেদেরকে এবং নিজেদের পরিবার ও সন্তান-সন্ততিকে সেই আগুন থেকে রক্ষা করো মানুষ এবং পাথর হবে যার জ্বালানী। সেখানে রুঢ় স্বভাব ও কঠোর হৃদয় ফেরেশতারা নিয়োজিত থাকবে যারা কখনো আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না এবং তাদেরকে যে নির্দেশ দেয়া হয় তাই পালন করে। (৬৬ : ৬)
তৃতীয়ত নিকটাত্মীয়দের দাওয়াত দেওয়া :
وَ اَنْذِرْ عَشِیْرَتَكَ الْاَقْرَبِیْنَۙ
তুমি তোমার নিকটাত্মীয়দের সতর্ক কর।” (সূরা আশ-শুআ’রা: ২১৪) নিজ বংশের লোকদেরকে দাওয়াত দেওয়া। লক্ষ রাখতে হবে কোনো বিষয়ে জোর বা বিতর্ক না করে ভালো ব্যবহার ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে দাওয়াত পৌছনো।
চতুর্থত:নিজের বন্ধুবান্ধব ও আশপাশের মানুষের নিকট দাওয়াত দেওয়া :
যাদের সঙ্গে আপনি প্রতিদিন দেখা করেন, কথা বলেন
,তাদের সঙ্গে ধীরে ধীরে ইসলামের মূল বার্তাগুলো তুলে ধরা। এবং ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা থাকলে, সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সংশোধন করতে চেষ্টা করা।
একজন দাঈ ব্যক্তিগত ভাবে তার চারপাশের মানুষের কাছে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরার পর, সমাজ বা রাষ্ট্রের মানুষকে ইসলাম মেনে চলার জন্য তার সামর্থ্য অনুযায়ী দাওয়াত পৌছাবে।
পন্ঞ্চমত নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা আলোকে সর্বসাধারণের নিকট দাওয়াত পৌঁছানো: এটা হতে পারে ওয়াজ মাহফিল, সেমিনার সিম্পোজিয়াম, গ্রুপ দাওয়াত,ব্লগিং অথবা বিষয় ভিত্তিক ভিডিও তৈরীর মাধ্যমে আল্লাহর দিকে আহবান করা। আল্লাহ বলেন :-
اُدْعُ اِلٰى سَبِیْلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَ الْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَ جَادِلْهُمْ بِالَّتِیْ هِیَ اَحْسَنُ١ؕ اِنَّ رَبَّكَ هُوَ اَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِیْلِهٖ وَ هُوَ اَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِیْنَ
হে নবী! প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তা এবং সদুপদেশ সহকারে তোমার রবের পথের দিকে দাওয়াত দাও এবং লোকদের সাথে বিতর্ক করো সর্বোত্তম পদ্ধতিতে। তোমার রবই বেশী ভালো জানেন কে তাঁর পথচ্যুত হয়ে আছে এবং কে আছে সঠিক পথে। (সুরা নাহল ১২৫)
তাই সময়, জায়গা ও মানুষের মানসিকতা বুঝে দাওয়াতি কাজ করা, কোন ভাবেই বির্তকে না জড়িয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। দাওয়াতি কাজের ফলাফল আল্লাহর হাতে, দাঈদের কাজ হলো বীজ বপন করা।
ব্যক্তিগত দাওয়াতি কাজের একটা পরিকল্পনা:
১.নিয়ত সংশোধন ও প্রস্তুতি : মানসিক ভাবে প্রস্তুতি ও স্থির সিদ্ধান্ত নেওয়া,যে এ কাজ শুধু মাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য,দুনিয়ার খ্যাতি ও পরিচিতি পাওয়ার জন্য নয়।
কুরআন, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য ব্যাপক অধ্যায়ন করা, যাতে সহজ সঠিকভাবে দাওয়াত উপস্থাপন করা যায়।
২.লক্ষ্য নির্ধারণ: পরিবার, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী, সহকর্মী—এই ৪টি স্তরে দাওয়াতের জন্য আলাদা আলাদা পরিকল্পনা তৈরী করা।
প্রতি সপ্তাহে সু নির্দিষ্ট ১–২ জনের নিকট দাওয়াত পৌছানো, যাতে মনোযোগ দিয়ে সময় নিয়ে দাওয়াত উপস্থাপন করা যায়।
৩. ক্রমধারা অবলম্বন করা :-একটা সুন্দর সুসম্পর্ক তৈরী করা, যাতে দাঈর কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনে।
মাঝেমধ্যে ছোটখাটো উপহার দেয়া, কুরআনিক গল্প শুনানোর মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করে তোলা।
৪. সময় ভিত্তিক পরিকল্পনা: দাওয়াতি কাজের একটা সময় ভিত্তিক লিখিত পরিকল্পনা থাকবে, দিন,সাপ্তাহ, মাস ও বছর এর জন্য। এবং মাঝে মাঝে তা নিয়ে একান্ত পর্যালোচনায় বসা।
৫. বাস্তবধর্মী আলোচনা সহজ ভাষায় উপস্থাপন :দাওয়াতি সভা, মাহফিল,বা উপস্থিত কোন জমায়েতে মনুষকে আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত, রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাজের ধারাবাহিকতা ঈমানী দায়িত্ব, পরকালীন জবাবদিহিতা ও সহজ বিষয়ে সাবলীলভাবে উপস্থাপন করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।
৬. চম্বুকীয় চরিত্র অর্জন এবং চারিত্রিক মাধুর্যতা দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করা জন্য, নিরহংকার জীবনযাপন ও
দৃষ্টি ও আচরণে কোমলতা রাখা।
৮. ব্যক্তিগত দাওয়াতি ডায়েরি ম্যানটেইন করার চেষ্টা করা সর্বোপরি আল্লাহর নিকট দোয়া করা।
চলবে —
বই- দাঈ ও সংগঠক-লেখক- আবু নাঈম মু শহীদুল্লাহ্